কাশিয়ানীতে স্কুল শিক্ষকের বাড়ি জবর দখলের চেষ্টা
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : দুলাল বিশ্বাস
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্কুল শিক্ষকের বাড়ি জবর দখলের চেষ্টা ও পরিবারের সদস্যদের জীবননাশের হুমকী প্রদান করে আসছে প্রতিবেশী রাজাকার পুত্র হারুন অর রশীদ মোল্যা। দিনে ও রাতে দখল পায়তারা ও দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে তাদের মারপিঠের আতঙ্কে জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে ওই পরিবারটি। এঘটনায় কাশিয়ানী থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছে ভুক্তভুগী পরিবার। ডায়েরী নং ৮৬২ । তারপরও দখলদারদের হাত থেকে বাচঁতে পারছেনা তারা।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাশিয়ানী উপজেলাধীন রামদিয়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিরোদ বরন রায় (৭২) তার পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছেন। আনুমানিক ২০ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী মৃত খেয়াল উদ্দিনের পূত্র হারুন অর রশীদ মোল্লা ধর্ম ভাই পাতিয়ে নিরোদ বরন রায়ের কাছ থেকে ১৩ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেন। এবং তিনি জায়গা বুঝে পেয়ে সেখানে বসত বাড়ি স্থাপন করে যথারীতি বসবাস করে আসছেন। এলকার কিছু কুচক্রি লোকের পরামর্শে লোভের বশীভুত হয়ে হারুন মোল্যা তার জায়গা কম আছে বলে বিভিন্ন সময় ওই শিক্ষকে চাপ দিতে থাকে। এব্যাপারে নিরোদ বাবু তাকে তার জায়গা তো আরো আগে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বললে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ তাদের স্বামী স্ত্রী ও মেয়ে জামাইদের হত্যা করে গুম করে ফেলার হুমকী দেয়। এঘটনায় রামদিয়া এলাকায় জানাজানি হলে বেথুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুর হাসান সহ এলাকার গণ্যমাণ্য শালিসগণ একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে বসেন এবং এক পর্যায়ে সদ্য মাপামপি করে হারুন অর রশীদকে পুনরায় তার জায়গা বুঝে দেওয়া হয়। দেখা যায় হারুন মোল্লা ১৩ শতাংশের মালিক হলেও তিনি আরো ৩ শতাংশ বেশী ভোগ দখল করে আসছেন। সালিশিতে উপস্থিত চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান নিরোদ বরন রায়কে অনুরোধ করে ওই বাড়তি ৩ শতাংশ জায়গা হারুন মোল্লাকে দিয়ে দেন। এরপরেও হারুন মোল্লা তার লোকজন নিয়ে প্রতিনিয়ত ওই নিরিহ হিন্দু ভদ্রলোক স্কুল শিক্ষকের বাড়ি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে গিয়েও মিলছেনা কোন সুরাহা।
এব্যাপারে স্থানীয় রামদিয়া তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত আইসি বাবুর আক্তার বলেন, বিষয়টি আমরাও জানি হারুন মোল্যা তার জায়গা বুঝে পেয়েও বেশী জায়গা ভোগ দখল করছেন। তারপরেও তিনি ওই শিক্ষককে ছাড়ছেন না। দিনে ঘর নির্মানের চেষ্টা। রাতে মাটি ফেলে জায়গা ভরাট করা। এধরনের কাজে সে লেগে রয়েছে। আমরা একাধিক বার ফোর্স পাঠিয়ে এ দখল করা থেকে ঠেকাচ্ছি। সে কারনে বলেছি একটি মামলা করার জন্য। তাহলে পরিবারটি একটি ন্যায় বিচার পাবে।
এব্যাপারে হারুন মোল্লার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আমার জায়গা বুঝে পাইনি। সেজন্য এধরনের কাজ আমাকে করতে হচ্ছে। আবার মাপ দিয়ে আমার জায়গা বুঝে দিলে আমি সরে যাব।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয়রা জানান, আসলেই হারুন মোল্লা একজন দখলদার ভুমিদস্যু। তাদের পূর্ব ইতিহাস আরো খারাপ। তার বাবা খেয়াল উদ্দিন ছিলেন এ এলাকার নাম করা রাজাকার। তারা এধরনের কাজে ভয় পায় না। এবিষয়ে হারুন মোল্লা গর্বের সাথে বলেন, আমার বাবা রাজাকার ছিলেন বলেই এ এলাকার অনেকের জীবন ও সম্পদ রক্ষা হয়েছে।
অপর দিকে স্কুল শিক্ষক নিরোদ বরন রায় তার বসত বাড়ি রক্ষা ও তার পরিবার এবং জামাইজনের জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।
মন্তব্য করুন